মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

আপনি কি দেখতে চিকন? পাতলা? হ্যাংলা?  পাড়ায়, মহল্লায়, বন্ধুদের কাছে এমনকি অফিসে, চিকন হওয়ার কারণে ঠাট্টার পাত্র হয়ে পড়েছেন? ভাবছেন একটু মোটা হলে ভালো লাগতো। এজন্য চেষ্টাও করেছেন অনেক। অনেক ঔষধ খেয়েছেন, কোন কিছুই কোন কাজে আসেনি। বরঞ্চ আপনার শরীরের ক্ষতি করেছেন অনেক। তাহলে মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায় এই পোস্টটি আপনার জন্য, শেষ অবধি করতে থাকুন এখানে বর্ণিত ভিন্ন ভিন্ন পাঁচটি গাছ দিয়ে প্রস্ ভেষজ ঔষধের পছন্দমত যেকোনো একটি ব্যবহার করতে শুরু করুন। মাত্র সাত দিনেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার সাথে আসলে কি ঘটতে যাচ্ছে। চলুন জেনে নেয়া যাক কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়া মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায় সম্পর্কে।


মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়



সুচিপত্র : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

  1. বহেড়া
    • গাছ পরিচিতি
    • ব্যবহার বিধি
  2. ডুমুর 
    • গাছ পরিচিতি
    • ব্যবহার বিধি
  3. ঘেটু
    • গাছ পরিচিতি
    • ব্যবহার বিধি
  4. আঁশফল (কাঠলিচু)
    • গাছ পরিচিতি
    • ব্যবহার বিধি
  5. ভুঁই আমলা
    • গাছ পরিচিতি
    • ব্যবহার বিধি
  6. উপসংহার 


১. বহেড়া

গাছ পরিচিতি

বয়রা গাছ ৫০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়, পার্বত্য অঞ্চলে এ মূল্যবান কাজটি অধিক জন্মায়। গাছের বাকল ধূসর চাই রঙের হয়। এর পাতা কাঁঠাল পাতার মত মোটা, লম্বায় প্রায় ৫ ইঞ্চি। । ফুল ডিম্বাকৃতির লম্বায় প্রায় এক ইঞ্চির মতো। কাঁচা অবস্থায় ফলের রং সবুজ থাকে, পেকে গেলে লাল হয়ে যায়।পরে শুকিয়ে ক্রমশ বাদামী রঙের হয়ে যায়। ফলের বাইরের আবরণ মসৃন ও শক্ত এবং ভেতরে একটিমাত্র শক্ত বীজ থাকে। ভারতবর্ষে এ গাছের জন্ম। ভারত, পাকিস্তানসহ বাংলাদেশের বনাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে এ গাছ দেখা যায়।


মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়



ব্যবহার বিধি : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

এক গ্লাস পানিতে এক চামচ বহেড়া চূর্ণ মিশিয়ে সকাল ও রাতে সেবন করলে অত্যধিক পরিমাণে ক্ষুধা বেড়ে যায়, ক্ষুধা বেড়ে গেলে স্বভাবতই খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাবে। এবং শরীর মোটা হতে থাকবে। এটি অত্যন্ত কার্যকরী ও পরীক্ষিত একটি পদ্ধতি। এটি ব্যবহারে মাত্র ৭ দিনে আপনি মোটা হতে পারবেন। মোটা হওয়ার সম্পুর্ণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত প্রাকৃতিক একটি পদ্ধতি।


আরো পড়ুন: ছয়টি ভেষজ গাছে ডায়বেটিস নিরাময়ের প্রাকৃতিক উপায় জেনে নিন


২. ডুমুর 

গাছ পরিচিতি

ডুমুর একটি মাঝারি আকারের গাছ। লম্বায় খুব একটা বড় হয় না। উচ্চতায় ২০ থেকে ২২ ফুট এর মত হয়। শীতে এই গাছ একেবারে পাতা শূন্য হয়ে যায়। মার্চের মধ্যে গাছে ফল ধরতে শুরু করে। আঙ্গুরের  থোকার মতো ডুমুর একসঙ্গে থাকলেও গাছের কান্ড ও ডালের সঙ্গে একেবারে লেগে থাকে। ডুমুর গাছের ডাল কাটলে এবং পাতা ছিঁড়লে ঘন দুধের মত এক ধরনের আঠা বের হয়। এজন্য গ্রামাঞ্চলে একে ক্ষির বৃক্ষ বলে।


মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়



ব্যবহারবিধি : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

১০ থেকে ১২ গ্রাম শুকনো পাকা ডুমুর এক কাপ পানিতে ভিজিয়ে জল দিয়ে আধা কাপ হলে নামিয়ে নিতে হবে। অতঃপর ছেকে নিয়ে সমপরিমাণ গাভীর দুধ সহ দিনে দুইবার সেবন করতে হবে। এভাবে নিয়মিত ২০ থেকে ২৫ দিন সেবন করলে দেহের সকল অপুষ্টি জনিত সমস্যাসহ মেদ বাড়বে, ক্ষুধা বাড়বে। ফলে প্রাকৃতিকভাবে দ্রত মোটা হয়ে যাবেন।


৩. ঘেটু

গাছ পরিচিতি

ঘেটু গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ হলেও উচ্চতায় প্রায় চার ফুট পর্যন্ত বড় হয়। আবার মাটির গুনে ও অনুকূল পরিবেশে ছয় ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে দেখা যায়। গাছ হলুদ অথবা শ্বেত বর্ণ লোমে ঢাকা থাকে। পাতা ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় দেখতে অনেকটা হৃদপিন্ডের মতো। ঘেটু মূলত গ্রামবাংলার উপেক্ষিত ফুল গাছ।ফুল দেখতে সাদা হলেও কিছুটা লালের আভা থাকে। ফলের ব্যাস আধা ইঞ্চির কাছাকাছি হয়। তবে চ্যাপ্টা ধরনের এবং দেখতে কালো। শীতের শেষে গাছে ফুল ফোটে এবং গরমের মৌসুমে ফল ধরে বাংলাদেশের মাঠে-ঘাটে রাস্তারপাশে জঙ্গলে প্রচুর ঘেটুর গাছ দেখতে পাওয়া যায়।


মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়


ব্যবহার বিধি : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

দীর্ঘদিন শরীর শুকনো ও মেদহীন হয়ে গেলে ঘেটু পাতার রস প্রতিদিন তিন থেকে চার চামচ পরিমাণ খেলে শরীর দ্রুত মেদযুক্ত ও শরীরে বল বৃদ্ধি হয়। যারা শারিরীক দুর্বলতায় ভুগছেন তারাও এটি ট্রাই করতে পারেন। এটি খুবই কার্যকরী পরীক্ষিত ও পাশ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত একটি ভেষজ ঔষধ।


আরো পড়ুন: ফুসফুসকে ভালো রাখার উপায় সমূহ কি


৪. আঁশফল (কাঠলিচু)

গাছ পরিচিতি

আঁশফল বড় ধরনের গাছ, উচ্চতায় প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত বাড়ে। পাতা ২ ইঞ্চি থেকে এক ফুট পর্যন্ত বড় হয়। পাতা চওড়া হয় আধা ইঞ্চি থেকে আড়াই ইঞ্চি পর্যন্ত। বোটা অবশ্য পাতার তুলনায় বেশ ছোট। ফুলের মুকুল খুবই নরম, রং সাদা হলেও হলুদের আভা থাকে। ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে গাছে ফুল ফোটে। আর এপ্রিল মে মাসের মধ্যে ফল পেকে যায়। এ গাছটির আদি জন্মস্থান বার্মায়, তবে আমাদের দেশে এর আগমন ঘটেছে প্রায় ৯ শত বছর আগে। বর্তমানে এটি আমাদের আমাদের দেশীয় উদ্ভিদে পরিণত হয়ে গেছে। আমাদের দেশে কাঠ লিচু নামেও এটি পরিচিত। বাংলাদেশসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলগুলোতে এবং উত্তরপ্রদেশে আস ফল গাছ ভাল জন্মায়।


মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়



ব্যবহার বিধি : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

ফলের শুকনো খোসা ভালোভাবে চূর্ণ করে নিয়ে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরুর দুধের সঙ্গে পাঁচ গ্রাম সেই চূর্ণ মিশিয়ে সেবন করলে শরীরে মেদ বৃদ্ধিসহ শক্তি ফিরে আসে শুধু আমাদের দেশে নয় চীনের চিকিৎসকগণ ফলের শুকনো খোসা ব্যবহার করে থাকে দ্রুত মোটা হওয়ার ঔষধ হিসেবে।


৫. ভুঁই আমলা

গাছ পরিচিতি

এটি বর্ষজীবী ও গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, খুবই ছোট। লম্বায় ৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। গাছের ডাল খাড়াভাবে বের হয়। উপরের শাখা সিরাযুক্ত এবং নরম লোম থাকে। ফুলের আকার ছোট ও গোলাকার। পাতা দেখতে অনেকটা আমলকির মত তবে চওড়ায় কিছুটা বড়। পাতার বোটা লাল এবং সাদা হয়, ফল খুবই ছোট চ্যাপ্টা এবং গোলাকার। এর মধ্যে তিনটি বিভাগ রয়েছে বীজের রং সাদা এবং নরম। ফলের রং হালকা হলুদ। বর্ষা শেষে ফুল ফোটে এবং শীতের শুরুতে ফল ধরে। ফল খেতে তিতা ও অম্ল রস যুক্ত।


মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়



ব্যবহার বিধি : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

ভুঁই আমলা পাতা ও শিকড়ের রস একটি উৎকৃষ্ট বল কারক ও শরীর বৃদ্ধি কারক ঔষধ। প্রতিদিন দুপুরের খাবারের পর দুই থেকে তিন চামচ রস নিয়মিত সেবন করলে শরীর মোটা হয়ে যায় শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি হয়।


আরো পড়ুন: মাইগ্রেনের ব্যাথা কমানোর উপায় কী


উপসংহার : মোটা হওয়ার ভেষজ ঔষধের নাম। রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়

আমি এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের উপকারের জন্য,  রোগা থেকে মোটা হওয়ার ভেষজ উপায়? নিয়ে বিভিন্ন ভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আলোচনাটি আপনাদের উপকারে আসবে। আপনি যে তথ্য জানার জন্য আর্টিকেলটি পড়া শুরু করেছিলেন, আশা করি সে তথ্য আপনি পরিষ্কার ভাবে জানতে পেরেছেন।


আর্টিকেলটি পড়ে আপনার যদি ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ফ্লোনেস্ট বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url